জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন বাবুল

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৬ সময়ঃ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:০৪ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

babulশাহ আলী থানার পুলিশের হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য মিরপুর বিভাগ পুলিশের কাছে আবেদন করেছিলেন চা-দোকানি বাবুল মাতব্বর। পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) স্বাক্ষরিত আবেদনটি সব সময় পকেটে রাখতেন বাবুল মাতব্বর। কিন্তু থানা-পুলিশ আর তাদের তথ্যদাতার (সোর্স) আগুনে সেই আবেদন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এর আগেও এমন একটি আবেদনপত্রে উপপুলিশ কমিশনারের সিলযুক্ত স্বাক্ষর নিয়ে এক বছর নিরাপদে ছিলেন বাবুল। কিন্তু এবার আর রেহাই পাননি বাবুল মাতব্বর। শেষ পর্যন্ত জীবিত অবস্থায় আগুনে পুড়ে মরতে হলো তাকে।

ডিসি বরাবর বাবুলের নিরাপত্তা চেয়ে লেখা আবেদনের একটি কপি দেখিয়ে বাবুলের বড় ছেলে রাজু আহমেদ বলেন, পুলিশের হয়রানি থেকে বাঁচতে ছয় মাস আগে মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারের (ডিসি) কাছে আবেদন করেছিল বাবা। সব সময় এটার আসল কপি তার বুকপকেটে রাখতো বাবা। পুলিশ চাঁদা নিতে আসলে এটা দেখাত। বাবার সাথে সেই আসল কপিটাও পুড়ে গেছে।

চাঁদা না দেওয়ায় গত বুধবার চার পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে বাবুলকে লাথি মেরে জ্বলন্ত চুলার ওপর ফেলে দেন পুলিশের শাহ আলী থানার সোর্স দেলোয়ার। পরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি।

policeগত বছরের ১৬ আগস্ট ডিসির কাছে আবেদনে বাবুল লিখেছিলেন, ‘আমি ইলেকট্রিক্যাল কাজসহ যখন যে কাজ পাই, তখন সে কাজ করে কোনোরকমে পরিবার নিয়ে দিন যাপন করে আসছি। আমি কোনো মাদক খাইও না এবং বিক্রিও করি না। লোক মারফত শুনতে পাই, আশপাশের ঘরের লোকজন নাকি মাদক বিক্রয় করে। উক্ত ঘরে মাদক বিক্রেতাদের খুঁজতে এসে পুলিশ আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে। গত বছর আমি আপনার অফিসে একটি দরখাস্ত দেওয়ার পর গত এক বছর যাবৎ থানা-পুলিশ আমাকে হয়রানি করেনি। বর্তমানে আবার থানা-পুলিশ আমাকে হয়রানি করে আসছে। ফলে আমি সব সময় পুলিশের ভয়ে থাকি। থানা-পুলিশ অন্যদের খুঁজতে গিয়ে যাতে আমাকে হয়রানি না করে, এই বিষয়ে শাহ আলী থানাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান এবং আমাকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার সুযোগ দানে আপনার মর্জি হয়।’

রাজু বলেন, ‘ডিসি থানায় বলে দিয়েছিলেন। পুলিশও আর ডিস্টার্ব করতো না। কিন্তু মাস খানেক ধরে তারা আবার চাঁদা চাওয়া শুরু করে।’

দরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের মিরপুরের উপকমিশনার কাইয়ুমুজ্জামান খান বলেন, ‘আমাকে খুঁজে দেখতে হবে।’

এদিকে, গতকাল শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম শাহীন মণ্ডলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রশাসনিক স্বার্থে তাকে কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে এ ঘটনায় ঐ থানার পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G